ঠাট থেকে রাগের উৎপত্তি। রাগ তিনভাগে বিভক্ত: সম্পূর্ণ, ষাড়ব ও ঔড়ব। সাত স্বরযুক্ত রাগ সম্পূর্ণ, ছয় স্বরযুক্ত রাগ ষাড়ব এবং পাঁচ স্বরযুক্ত রাগ ঔড়ব নামে পরিচিত। রাগের এই তিনটি মুখ্য জাতি থেকে আরোহী-অবরোহীতে ব্যবহূত স্বরসংখ্যা দ্বারা নয়টি জাতি পাওয়া যায়, যথা: সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ, সম্পূর্ণ-ষাড়ব, সম্পূর্ণ-ঔড়ব; ষাড়ব-সম্পূণ,র্ ষাড়ব-ষাড়ব, ষাড়ব-ঔড়ব; ঔড়ব-সম্পূর্ণ, ঔড়ব-ষাড়ব ও ঔড়ব-ঔড়ব। রাগের লক্ষণসমূহ হলো: ১. রাগ রচনায় যেকোন ঠাট থেকে স্বর নিতে হবে; ২. এতে কমপক্ষে পাঁচটি স্বর থাকবে এবং পূর্বাঙ্গ ও উত্তরাঙ্গ থেকে কমপক্ষে দুটি করে চলস্বর থাকতে হবে; ৩. রাগে আরোহী ও অবরোহী থাকবে এবং তা বিশিষ্ট নিয়ম মেনে চলবে; ৪. রাগে বাদী, সমবাদী, অনুবাদী, বিবাদী (রাগ বিশেষ), বর্জিত (রাগের নিয়ম মাফিক), জাতি, প্যকড়, সময়, অঙ্গ, আলাপ বা বিস্তার, তাল, বোলতান, বাট, সরগম প্রভৃতি থাকবে; ৫. রাগে রঞ্জকতা গুণ থাকবে; ৬. রাগে একটি বিশেষ রসের অভিব্যক্তি থাকবে; ৭. কোনও রাগেই ষড়জ স্বরটি বর্জিত হবে না; ৮. কোনও রাগেই মধ্যম ও পঞ্চম স্বর একসঙ্গে বর্জিত হবে না; ৯. কোনও রাগে একই স্বরের শুদ্ধ ও বিকৃত রূপ পাশাপাশি বসবে না, তবে ক্ষেত্রবিশেষে এর ব্যতিক্রম হতে পারে; ১০. রাগ সাত প্রকারে গঠন করা যায়: প্রথম প্রকার তিনভাগে বিভক্ত, যথা: শূদ্ধ, ছায়ালগ বা সালঙ্ক ও সংকীর্ণ। নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে গঠিত রাগ শুদ্ধ, যথা ভৈরব; দুটি রাগের সংমিশ্রণে গঠিত রাগ ছায়ালগ বা সালঙ্ক, যেমন শুদ্ধকল্যাণ (আরোহে ভূপালী, অবরোহে ইমন) এবং দুইয়ের অধিক রাগের সংমিশ্রণে গঠিত রাগ সংকীর্ণ, যেমন জয়জয়ন্তী। অবশিষ্ট ছয় প্রকার বিশেষ ছয়টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত এবং সেগুলি হচ্ছে রাগের ঢং বদলে দেওয়া (পূরিয়া ও মারবা), রাগের বাদী-সমবাদী দেওয়া (ভূপালী ও দেশকার), রাগের কোমল বা কড়ি স্বরগুলি বদলে দেওয়া (কাফি ও পূরবী), রাগের স্বর কমানো বা বাড়ানো (শুদ্ধকল্যাণ ও ভূপালী), রাগের স্থান বদলে দেওয়া (দরবারি কানাড়া ও আড়ানা) এবং রাগের সময় পরিবর্তন করে দেওয়া (সুহা কানাড়া ও নায়কী কানাড়া)।
তথ্যসূত্রঃ বাংলাপিডিয়া ।